পালংশাক বেশ জনপ্রিয়, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু পাতা সবজি। এর ইংরেজি নাম Spinich ও বৈজ্ঞানিক নাম Spinacea olerocea. এ সবজি অধিক ভিটামিনসমৃদ্ধ। বাংলাদেশে শীতকালে এর চাষ করা হয়।
পালংশাকের জাত: পুষা জয়ন্তী, কপি পালং, গ্রিন, সবুজ বাংলা ও টকপালং। এছাড়া আছে নবেল জায়েন্ট, ব্যানার্জি জায়েন্ট, পুষ্প জ্যোত, নবেল জায়েন্ট, ব্যানার্জি জায়েন্ট, ইত্যাদি।
জাতের নাম | জীবনকাল (দিন) | বপনের সময় | বিঘা প্রতি ফলন | অন্যান্য বৈশিষ্ট্যসমূহ |
***ইভান | ২৫-৩০ | সারা বছর | ২৫০- ২৬৫ মণ | হালকা সবুজ বোঁটা। পাতা গাঢ় সবুজ, চওড়া, পুরু ও রসালো। দ্রুত বর্ধনশীল ও উচ্চ ফলনশীল। |
কপি পালং | ২৫-৩০ | সারা বছর | ৯০-১০৫ মণ | দ্রুত বর্ধনশীল, আকর্ষণীয় সবুজ |
সাথী | ২৫-৩০ | দ্রুত বর্ধনশীল, আকর্ষণীয় সবুজ। পাতা সবুজ ও নরম। | ||
আংকিতা | সারা বছর | ২২০-২৫০ মণ | লাল রং এর দ্রুত বর্ধনশীল পাতা জাতীয় সবজি ( লাল পালং )। |
মাটির প্রকৃতি
ভাদ্র-আশ্বিন (আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি) মাসের মধ্যে বীজ বপন করা হয়।
দো-আঁশ এবং এঁটেল মাটি পালংশাক চাষের জন্য উপযোগী।
জমি তৈরি ও বীজ বপনঃ
- পালং শাক চাষ করার আগে চাষ ও মই দিয়ে জমির মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে তৈরি করে নিতে হবে।
- পরবর্তীতে জমিতে আইলে সরাসরি বীজ ছিটিয়ে বা গর্ত তৈরি করে মাদায় বীজ বপন করা যায় অথবা বীজতলায় চারা তৈরি করে সে চারা রোপণ করেও পালংশাক চাষ করা যায়। বীজ বপনের পূর্বে বীজ ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়।
- এক সারি থেকে অন্য সারির দূরত্ব ৮ ইঞ্চি রাখতে হবে।
- একটি কাঠির সাহায্যে ১.৫-২.০ সেমি. গভীর লাইন টেনে সারিতে বীজ বপন করে মাটি সমান করে দিতে হবে। নির্দিষ্ট দূরত্বে গর্ত তৈরি করে প্রতি মাদায় ২-৩ টি করে বীজ বপন করতে হয়।
বীজ বপনের হার:
প্রতি আলে ⇒৩৫-৪০ গ্রাম
প্রতি শতকে ⇒১১৭ গ্রাম
প্রতি একরে ⇒৯-১১ কেজি
প্রতি হেক্টরে ⇒২৫-৩০ কেজি
প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
- ইউরিয়া ছাড়া সব সার জমির শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হয়। তবে গোবর জমি তৈরির প্রথম দিকে প্রয়োগ করাই উত্তম।
- ইউরিয়া সার চারা গজানোর ৮-১০ দিন পর থেকে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
সারের নাম | সারের পরিমাণ (শতকের জন্য) | সারের পরিমাণ (33শতকের জন্য) |
পচা গোবর/কম্পোস্ট | ৪০ কেজি | 1320 kg |
টিএসপি | ১.০ কেজি | 33 kg |
ইউরিয়া | ৫০০ গ্রাম | 16.5 kg |
এমওপি/পটাশ | ৫০০ গ্রাম | 16.5 kg |
সেচ ও নিষ্কাশন
১. জমিতে রস কম থাকলে অবশ্যই সেচ দিতে হবে।
২. জমিতে পানি যাতে না জমে সেজন্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
চাষের সময় পরিচর্যা
১. নিড়ানির সাহায্যে জমির ঘাস সময়মত বাছাই করতে হবে।
২. মাটি ঝুরঝুরে করে দিতে হবে।
৩. বীজ বপনের ১৫-২০ দিন পর গাছ উঠিয়ে পাতলা করে দিতে হবে।
উৎপাদিত ফসলের পরিমাণ
প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ১-২.৫ টন পালং শাক পাওয়া সম্ভব।
ফলন:
প্রতি আলে⇒ ৮-১০ কেজি
প্রতি শতকে⇒ ২৮-৩৭ কেজি
প্রতি একরে⇒ ২৮০০-৩৮০০ কেজি
প্রতি হেক্টরে⇒ ৭-৯ টন
রোগ ব্যবস্থাপনা: পালংশাকের প্রধান রোগের মধ্যে রয়েছে-
১) গোড়া পচা রোগ
২) পাতার দাগ রোগ
৩) পাতা ধ্বসা রোগ।
এছাড়া পালংশাকে আরও দুইধরনের রোগ দেখা যায়। যেমন- ডাউনি মিলডিউ, পাতায় দাগ।