Vermicompost-কেঁচো সার
Vermicompost-কেঁচো সার একটি জৈব সার যা জমির উর্বরতা বাড়াতে ব্যবহার করা হয় । … এ সার সব ধরনের ফসল ক্ষেতে ব্যবহার করা যায়। এটি পৃথিবীতে অধিক ব্যাবহৃত জৈব সারের অন্যতম,পরিবেশবান্ধব সার।




Vermicompost-কেঁচো সার একটি জৈব সার যা জমির উর্বরতা বাড়াতে ব্যবহার করা হয় । … এ সার সব ধরনের ফসল ক্ষেতে ব্যবহার করা যায়। এটি পৃথিবীতে অধিক ব্যাবহৃত জৈব সারের অন্যতম,পরিবেশবান্ধব সার।

Vermicompost-কেঁচো সার তৈরির পদ্ধতি(Making of vermicompost):
(১) কেঁচো কম্পোষ্ট তৈরি করতে হলে প্রথমে গর্তের তৈরি করতে হয়। এরপর এসব গর্তে ঘাস, আমের পাতা বা খামারের ফেলে দেয়া অংশ এসবের যেকোনো একটি ছোট ছোট করে কেটে এর প্রায় ২৫ কেজি হিসেবে নিতে হয়।
(২) তবে এসব আবর্জনা গর্তে ফেলার আগে গর্তের তলদেশসহ চারপাশে পলিথিন দিয়ে মুড়ে দিতে হবে। এতে গর্তের কেঁচো পিট থেকে বাইরে যেতে পারবে না।
(৩) Vermicompost-কেঁচো সার কম্পোস্ট তৈরির জন্য প্রথমেই পলিথিন বিছানোর পরে গর্তের নিচে ৬ ইঞ্চি পুরু করে বেড বানাতে হবে। এই বেড তৈরির জন্য ভালো মাটি ও ও গোবর সমপরিমাণে মিশাতে হবে এবং এসব মিশানো গাবর ও মাটি পরে কেঁচোর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
(৪) সাধারণত এসব কম্পোস্ট তৈরির কাজে দুই ধরণের কেঁচোর জাত রয়েছে। তা হলো- এপিজিক ও এন্ডোজিক নামের। এপিজিক জাতগুলো দেখতে লাল রঙের। এরা মাটির উপরের স্তরেই বিচরণ করে থাকে। অপরদিকে এন্ডোজিক জাতগুলো প্রধানত ছাই রঙের হয়ে থাকে। এরা সাধারণত সার উৎপাদন করতে পারে না তবে এরা মাটির ভৌত ও জৈব গুণাবলির উন্নতি করতে পারে।
(৫) কেঁচো কম্পোষ্ট তৈরির জন্য গর্ত গোবর ও মাটি দিয়ে ভর্তি করার পর ২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১ মিটার প্রস্থ মাপের পিটে ৫০০ টি কেঁচো প্রয়োগ করতে হয়। কেঁচো প্রয়োগের পর ২ ইঞ্চি জৈব সার এবং তার উপর ৪ ইঞ্চি কাঁচা পাতা দিতে হবে। গর্তের উপরিভাগ পাটের ভিজানো চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে এবং প্রতিদিন ২ বার জল ছিটিয়ে দিতে হবে। কাঁচা পাতা কালো বর্ণ ধারণ করলে জল দেওয়া বন্ধ করতে হবে। ৪ সপ্তাহ পরে পুণরায় কাঁচা পাতা দিতে হবে এবং চট দিয়ে ঢেঁকে ভিজাতে হবে। এবার ৪ দিন পর পর কাঁচা পাতা দিতে হবে। ৬ সপ্তাহ পরে নেটে চেলে কেঁচো আলাদা করে সার ব্যবহার বা বাজারজাত করা যাবে। কেঁচো সারের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য গর্তের উপরিভাগে ছায়া প্রদানের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি। তাছাড়া মাটি এবং তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে কেঁচো মারা যেতে পারে বলে কেঁচো উৎপাদনে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
(৬) এসব কেঁচো যে সব খাবার খায় তা গর্তে নিয়মিত ভাবে সরবরাহ করতে হবে। কেঁচোর খাবারের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় ঘাস, খামারজাত পদার্থ, আঁখের ও কলার ফেলে দেয়া অংশ ইত্যাদি।
(৭) সার তৈরি হওয়ার পর চৌবাচ্চা হতে সতর্কতার সাথে কম্পোস্ট তুলে চালুনি দিয়ে চালতে হবে। সার আলাদা করে কেঁচোগুলো পুনরায় কম্পোস্ট তৈরির কাজে ব্যবহার করতে হবে।
(৮) কেঁচো সার বাজারের চাহিদা অনুযায়ী/ নিজস্ব ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট সাইজের প্যাকেট/বস্তা ভর্তি করে রাখা যেতে পারে।
ফসলে Vermicompost-কেঁচো সার সারের ব্যবহার:
Vermicompost-কেঁচো সার ধান, পাট প্রভৃতি জলাবদ্ধ অবস্থায় জন্মানো ফসলে বিঘা প্রতি ৫০ কেজি কেঁচো সার শেষ চাষ-মইয়ের আগে জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। বৃষ্টিনির্ভর ফসল তিল, মুগ ছোলা, মাসকলাই, জোয়ার, বাজরা, সরিষা এসব কম পুষ্টি চাহিদা সম্পন্ন ফসলে রাসায়নিক সার ছাড়াই একর প্রতি মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ কেজি কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে অধিক ফলন পাওয়া যায়। সূর্যমুখী, বার্লি, ভুট্টা ও গম এসব ফসলে কৃষকরা সাধারণত হালকা সেচ, রাসায়নিক সার ব্যবহার করে থাকে।এ ক্ষেত্রে একর প্রতি মাত্র ৭০০ থেকে ৮০০ কেজি কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে অধিক ফলন পাওয়া যায়। পেঁয়াজ, রসুন, আদা, গাজার, আলু, মিস্টি আলু, ঢেঁড়শ, বেগুন, শসা ইত্যাদি ফসলে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে একর প্রতি মাত্র ১০০০ কেজি কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে কৃষকরা অধিক ফলন পাচ্ছেন। ফুলকপি, বাধাকপি, আলু, মরিচ, ধান, টমেটো, রসুন, আদা, হলুদ এসবের ক্ষেত্রে অনুমোদিত রাসায়নিক সারের অর্ধেক মাত্রার সাথে একর প্রতি মাত্র ১ টন কেঁচো কম্পোস্ট সার প্রয়োগের সুপারিশ রয়েছে। বিশেষত ফল বাগানে গাছ প্রতি ১ থেকে ১৫ কেজি কেঁচো কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে অধিক ফল পাওয়া যায়। পেঁপে, কলা, লেবু, পেয়ারা প্রভৃতি ছোট আকারের ফলদ গাছে বছরে একবার প্রতি গাছের গোড়ায় চারদিকে গোল নালা কেটে গাছ প্রতি ৫ কেজি কেঁচো সার দিয়ে ওপরে মাটি চাপা দিতে হবে। শাকসবজির জমিতে কেঁচো সার মিশিয়ে বীজ বা চারা লাগাতে হবে। ফুল গাছে গাছ প্রতি ৫০ থেকে ২০০ গ্রাম সার চারা লাগানোর সময় গাছের গোড়ায় মাটির সঙ্গে মিশিয়ে চারা লাগাতে হবে।
User Reviews
Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.
General Inquiries
There are no inquiries yet.
There are no reviews yet.