Red Lady Papaya Seeds (F1 Hybrid- 5 pcs)
রেড লেডীঃ এই জাতের ফলগুলি বেশ বড়, ফলের ভিতরে টক-টকে লাল, একটি ফলের ওজন ১.৫-২ কেজি। মাংস বেশ পুরু, স্বাদে বেশ মিষ্টি ও সুগন্ধিযুক্ত । গাছের উচ্চতা যখন ৭৫-৯০ সেঃ মিঃ হয় তখন ফল ধরা শুরু হয় । প্রতিটি গাছে ৩০ টির অধিক ফল ধারন করে । এই জাতের পেঁপে গাছে স্পট ভাইরাস রোগ খুবই কম ।
জমি নির্বাচনঃ পেঁপে চাষের জন্য গভীর মাটি দরকার হয় না। ২ মিটার গভীরতা দো-আঁশ মাটি ও সু- নিস্কাশিত উঁচু জমিতে পেঁপে ভালোভাবে চাষ করা যায় । মাঝারি ধরণের পানি ধারন ক্ষমতা রয়েছে এবং প্রয়োজনে পানি নিস্কাশন করা যায়। খুব অল্প মাটিতে গাছ ভালো হয় না । সেই জন্য গাছ লাগানোর আগে মাটি পরীক্ষা করে চুন দেওয়া দরকার । বীজ মাটিতে বসানোর আগে ৪-৫ ঘণ্টা পানিতে ভিজাতে হবে। এর বেশি সময় যেন পানিতে না থাকে ।
চারা তৈরিঃ ১০০ গ্রাম বীজ থেকে যে চারা হবে তা ১ হেক্টর জমিতে লাগানো যায়। প্রতি গ্রামে বীজের সংখ্যা ৬০-৭৫ টি সে হিসেবে ৬০০০ থেকে ৭৫০০ চারা দিয়ে এক হেক্টর জমিতে চারা লাগানো যায়।
চারা তৈরির জন্য প্রথমে আড়া আড়ি ৩-৪ টি চাষ দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। ফলে আগাছা নষ্ট হবে ও মাটি ঝুর ঝুরে হবে । চাষের সময় ভাল করে গোবর সার ও পাতা পঁচা সার কম্পোস্ট সার মিশিয়ে ঝুরঝুরে বীজতলা তৈরি করতে হবে। বীজতলা তৈরির জন্য ১ মিঃ-২মিঃ জায়গা বেছে নিতে হবে। বীজতলা ১৫ সেঃ মিঃ উঁচু তৈরি করে তাতে ১৫ সেঃ মিঃ সারির দূরত্বে ৫ সেঃ মিঃ অন্তর একটি করে বীজ বসাতে হবে। বীজ বপনের গভীরতা কখনো ২ সেঃ মিঃ এর বাশি হওয়া উচিত নয় । বীজ বীজতলায় বসানোর আগে ব্যাভিস্টিন বা জমিনেট এগ্রোসান দ্বারা বীজ শোধন করে নিতে হবে। বীজতলায় প্রয়োজন মত ঝাঝারি দিয়ে পানি সেচ দিতে হবে। চারাগুলো ১০-১২ সেঃমিঃ হলে জমিতে বসানো যেতে পারে।
পলিথিন ব্যাগ এ চারা তৈরি করার জন্য ১৫-১০ সেঃমিঃ মাপের পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। এই মাপের ব্যাগে অর্ধেক মাটি ও অর্ধেক কম্পোস্ট সার ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে ভর্তি করতে হবে। বীজ তলাতে মার্চ, এপ্রিল বা জুন-জুলাই মাসে ছরিয়ে চারা তৈরি করা ভাল। তবে পলিথিন প্যাকেটে সারা বছর বীজ বুনা যায়।
চারা রপনের ১৫ দিন আগে গর্তে সার প্রয়োগঃ বীজতলায় চারার বয়স যখন এক মাস হবে অর্থাৎ ১০-১২ সেঃমিঃ উচ্চতা সম্পন্ন চারা রোপণের উপযোগী হয় । জমি ভালোভাবে চাষ করে ২ মিটার দূরে দূরে সারি কাটতে হবে এবং প্রতি সারিতে ঐ একই দূরত্বে পেঁপে চারা রোপণ করতে হবে। প্রতি সারিতে ৬০x৬০x৬০ সেঃমিঃ আকারে গর্ত করতে হবে। গাছ লাগাবার ১৫ দিন আগে প্রতি গর্তে ৬ কেজি পঁচানো গোবর(যাকে পুরাতন গোবর বলে), আধা কেজি খৈল, ১ কেজি হাড়ের গুঁড়া, আধা কেজি শুটকি মাছের গুঁড়া ২৫০ গ্রাম তি.এস.পি।। ১২৫ গ্রাম ইউরিয়া সার মাটির সাথে ভাল করে মিশিয়ে রাখতে হবে। যেদিন উক্ত সার মাটিতে মিশানো হবে ঠিক তার ১৫ দিন পরে গর্তে চারা লাগাবেন। প্রতি গর্তে ১ টি করে চারা লাগানোর সঠিক স্থানে সোজা করে লাগাতে হবে, যাতে শিকড় উপরে না থাকে বা শিকড় ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। বিকালের দিকে চারা রোপণ করে সেচ দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে মাটি ভিজা অবস্থায় পানি দেয়া যাবেনা। গর্তে ১ টি করে চারা রোপণ করার কারন হলো উল্লেখিত হাইব্রিড পেপের জাতগুলিতে দুই ধরণের ফুল ধরে, ২০% উভয়লিঙ্গ এবং ৮০% স্ত্রী ফুল। এই দুই ধরণের ফুলেই ফল ধরে তাই গর্তে দেশী অন্য জাতের মত একাধিক চারা লাগাতে হয় না । তাছাড়া উক্ত জাতগুলির বীজ ৯৯% অংকুরোতগম হয়।
গর্তে চারা লাগানোর আড়াই মাস পর সার প্রয়োগঃ চারার বয়স যখন গর্তে আড়াই মাস হবে তখন প্রতি গাছের গোঁড়া থেকে ১ হাত দূরে চারিপাশে ৩ কেজি পঁচানো গোবর, বা আবর্জনা, পঁচা সার, ১২৫ গ্রাম তি.এস.পি, ১২৫ গ্রাম পটাশ সার দিয়ে মাটি তেনে দিতে হবে।
সেচ প্রয়োগঃ সার প্রয়োগের পর সেচ দেওয়া দরকার । শীতকালে বৃষ্টি না হলে ৮-১০ দিন অন্তর সেচ দিতে হবে । গরমের মৌসুমে ৭ দিনে একবার সেচ দেওয়া প্রয়োজন। তবে গাছের গোরায় যেন পানি জমে না থাকে । পানি জমে থাকলে ছত্রাকজনিত পচা রোগে আক্রান্ত হয়ে খুব তাড়াতাড়ি ঢলে পড়বে।
মাধ্যমিক পরিচর্যাঃ বাগান সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। গাছের গোঁড়া থেকে আগাছা তুলে ফেলে দিতে হবে। গাছের গোঁড়াও মাটি কোদাল দিয়ে হালকা আলগা করে দিতে হবে । গাছে অতিরিক্ত ফল ধরলে কিছু ফল পেড়ে নিয়ে হালকা করে দিলে, বাকী ফল বড় হবার সুযোগ পায়। পেঁপে গাছে বিভিন্ন হরমোন প্রয়োগ করে বেশ সুফল পাওয়া যায়। “ পি. জি. আর. (সি. পি. আর.) “ হরমোন ২ মিঃলিঃ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে পেঁপে গাছে স্প্রে করলে উতপাদন বাড়ে। গাছের মুকুল বা ফুল আসার সময় থেকে ১৫-২০ দিন অন্তর ৩ বার পি. জি. আর. (সি. পি. আর.) হরমোন স্প্রে করতে হবে।
এছাড়া গাছে ফল বড় হলে বাঁশের খুঁটি দিয়ে গাছের দুই দিকে ঠেস দিতে হবে। রোগ ও পোকার আক্রমন হলে প্রয়োজনীয় ঔষুধ দিতে হবে।
ফল সংগ্রহঃ পেঁপে গাছে সাধারনত ৩-৪ মাসের মধ্যে ফুল আসে এবং প্রথম ফল পাওয়া যায় (৮-১০) মাসের মধ্যে। পুষ্ট হওয়ার সময় কোন কোন জাতের ফলে হলদে রং ধরবে, তবে সব জাতের ফল থেকে পানির মত তরল আঠা বের হবে।
উপরোক্ত হাইব্রিড পেঁপের জাত থেকে প্রতি গাছে (৩০-১০০) টি ফল পাওয়া যায়।
পেঁপের রোগ ও পোকা মাকড় দমনঃ
রোগঃ
· গোঁড়া পচা রোগঃ ( foot or collar root) বর্শা কালে গাছের গোঁড়াই পানি জমে থাকলে এক প্রকার ছত্রাকের আক্রমনে এই রগ হয়। গাছের গোঁড়ার অংশ পচে দুর্গন্ধ বের হয়, গাছ পড়ে মারা যায়। সে জন্য পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। আক্রান্ত গাছে প্রয়োগ করতে হবে বা মলমের মত করে ক্ষত স্থানে লাগাতে হবে।
· এন্থ্রাকনোজঃ ফলে এই রোগ হয়। যে সব ফলে কচি অবস্থায় রোদ লেগে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেই গুলোতে এই রোগ বেশী হয়। ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি লিটার পানিতে ৩ গ্রাম হিসাবে মিশিয়ে স্প্রে করলে এন্থ্রাকনোজ রোগ দমন করা যায়। প্রতি মাসে ১ বার ডাইথেন এম-৪৫স্প্রে করা উচিত, এতে গাছে ভাইরাস আসার সম্ভাবনা থাকে না।
· ফুল ও ফলের বোটা পচা রোগঃ এই রোগ প্রথমে ফলের বোটায় আক্রমন করে। ফুলের প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত হয়ে থাকে । ফলের বোটায় প্রথমে রোগ আক্রমন দেখা যায়। পরে বাদামী ও কালো রং এর দেখায় ফলে ফল ঝরে পড়ে । আক্রান্ত গাছে বোদ্রো মিক্সার ছিটিয়ে রোগ দমন করা যায় ।
কান্ড ছিদ্রকারী পোকাঃ এই পোকা কান্ড ফুটো করে গাছকে দুর্বল করে দেয় । ক্ষত স্থানে ভালো করে ডাইথেন দিয়ে পেইন্ট করে দিলে উপকার পাওয়া যায় ।
· লাল কামড়ঃ এই গাছের সবুজ অংশ শুরু নেয় এবং গাছ হলুদ হয়ে যায় । ফলগুলো খসখসে, কদাকার ও বিবর্ণ হয়ে যায় । ওমাইট বা কালথেন নামক
ঔষধ স্প্রে করলে ভালো হয় ।
রষ শোষক পোকাঃ পেঁপে গাছ চারা অবস্থায় রষ শোষক পোকা যেমনঃ থ্রিপস, জাবপোকা দ্বারা আক্রমন হয়। এই পোকা গুলি নরম পাতাগুলির তলপিঠে ক্রমাগত গাছের রস শোষণ করে। এর ফলে পাতাগুলো বিবর্ণ হয়ে আসে ও গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এই পোকা গুলি গাছের মোজাইজ ভাইরাস ঘটিত রোগের বাহক। তাই এই পোকার আক্রমন হলে ডাইমেক্রন ১০ ইসি নিয়মিত স্প্রে করতে হবে ।
· নেমাটোডঃ অতি সুক্ষ এক প্রকার অণুজীব এরা পেঁপের শিকড়ে আক্রমন করে । মাটির নিচ থেকে এর আক্রমন হলে পাতা উপরের দিকে উঠে ভিতরের দিকে শুকিয়ে যাবে । বেশী আক্রমনে গাছ বাড়েনা , ফুল ও হয় না। জমিতে নেমাগন ব্যাবহার করে নেমাটোড এর আক্রমন দমন করা যায় ।
Country of origin: Taiwan
37.50৳
General Inquiries
There are no inquiries yet.