মরিচের রোগ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

Added to wishlistRemoved from wishlist 10
DIBL  Micro Drip Tube 4mm rft
Added to wishlistRemoved from wishlist 10
6.00৳ 
Added to wishlistRemoved from wishlist 7
DIBL  Drip Tube PE 16mm rft
Added to wishlistRemoved from wishlist 7
12.00৳ 
Added to wishlistRemoved from wishlist 5
Mist irrigation with Anti Drainage Valve(Black+Black)
Added to wishlistRemoved from wishlist 5
55.00৳ 
Added to wishlistRemoved from wishlist 6
Adjustable Dripper
Added to wishlistRemoved from wishlist 6
10.00৳ 

Added to wishlistRemoved from wishlist 4
Screen Filter 1 inch Male with air point
Added to wishlistRemoved from wishlist 4
1,200.00৳ 
Added to wishlistRemoved from wishlist 0
Rain Gun Aluminum 130 feet 2 inch Female Adjustable 6 Nozzle
Added to wishlistRemoved from wishlist 0
18,850.00৳ 
Added to wishlistRemoved from wishlist 0
Rain Gun Aluminum 150 feet 2.5 inch Female Adjustable
Added to wishlistRemoved from wishlist 0
13,999.00৳ 
Added to wishlistRemoved from wishlist 0
Rain Gun Aluminum 115 feet 1.5 inch Female Adjustable
Added to wishlistRemoved from wishlist 0
6,850.00৳ 

রোগবালাই
মরিচের কিছু পোকামাকড় সমস্যা। এর মধ্যে পাতা কোঁকড়ানো, থ্রিপস পোকা, অতিক্ষুদ্র গাঢ় বাদামি মাকড়সা, জাবপোকা, ফলছিদ্রকারী পোকা অন্যতম। আর রোগের মধ্যে কা- পচা, ঢলেপড়া রোগ, মরিচপচা, ডগা শুকিয়ে যাওয়া ও ফল পচা বা অ্যানথ্রাকনোজ উল্লেখযোগ্য। আবাদের শুরু থেকে সুস্থ সবল চারা রোপণ, সুষম সার প্রয়োগ, সেচ নিকাশ, আগাছা দমন, পানি সেচ, আক্রান্ত পাতা বা ডাল ছিঁড়ে ফেলা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে অর্থাৎ ক্লিন আবাদের ফলে মরিচ উৎপাদন ফলন আশাতীত ভালো হবে।

রোগের নামঃমরিচের জাব পোকা

লক্ষণঃ

পোকা গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে গাছকে দুর্বল করে ফেলে । পূর্নাঙ্গ ও নিম্ফ পাতা, ফুল কচি ফল ও ডগার রস চুষে খায়। পাতা কুঁকড়ে যায়, গাছের বৃদ্ধি ও ফুল, ফল ধারণ বাধাগ্রস্থ হয়। এ পোকা থেকে নি:সৃত মধুরসে কালো শুটি মোল্ড ছত্রাক জন্মায়। বাতাসে আর্দ্রতা বেশী ও মেঘলা আকাশ থাকলে পোকার আক্রমণ বেশি হয়।

ব্যবস্থাপনাঃ

আক্রমনের প্রাথমিক অবস্থায় হাত দিয়ে পিষে মেরে ফেলা। লেডি বার্ড বিটলের পূর্নাঙ্গ ও কীড়া (গ্লাব) এবং সিরফিড ফ্লাই এর কীড়া জাব পোকা খায় বিধায় এদের সংরক্ষণ ও সংখ্যা বাড়ানো গেলে জাবপোকা অতিদ্রুত খেয়ে ফেলে।

* গাছের আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা * প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই প্রয়োগ করা * পরিষ্কার পানি জোরে স্প্রে করা * ক্ষেত পরিষ্কার /পরিচ্ছন্ন রাখা । * হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা । * তামাকের গুড়া (১০গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫গ্রাম) ও নিমের পাতার নির্যাস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা । * প্রতি গাছে ৫০ টির বেশি পোকা দেখা দিলে এডমেয়ার ২০ এসএল ০.৫ মিলি./লি হারে পানিতে শিশিয়ে স্প্রে করা।

রোগের নামঃমরিচের সাদা মাছি পোকা

লক্ষণঃ

খুব ছোট আকারের এ পোকা পাতার রস চুষে খায়। ফলে গাছের বাড়বাড়তি ব্যহত হয়। তাছাড়া এ পোকা কালো সুটি মোল্ড নামক ছত্রাক পাতায় জন্মাতে সহায়তা করে এবং ভাইরাস রোগ ছড়ায়। সাদা রংয়ের এ পোকা গাছের পাতার নিচের দিকে থাকে। লম্বায় ১ মিলিমিটারের চেয়ে সামান্য বড়। গাছের পাতা সামান্য নাড়া দিলে উড়ে চলে যায়। এ সকল পোকার শরীর সাদা মোম জাতীয় পদার্থ দ্বারা ঢাকা থাকে।

ক্ষতির নমুনাঃ পাতার নিচের দিক হতে প্রাপ্ত বয়স্ক ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক (নিম্ফ) পোকা পাতার রস চুষে খায় ফলে পাতা কুঁচকে যায় এবং গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। আক্রমণে প্রথমে পাতায় সাদা বা হলদেটে রং দেখা যায় পরে দাগগুলো একত্রে হয়ে সবুজ শিরাসহ পাতা হলুদ হয়ে যায়। এ পোকা খাওয়ার সময় আঠালো মিষ্টি রস নি:সরণ করে বিধায় ঐ আঠাতে কালো ছত্রাক জন্মাতে সহায়তা করে। এ পোকা ভাইরাস রোগ ছড়ায়। উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়া এ পোকা বিস্তারের জন্য সহায়ক।

জীবন চক্রঃ এ পোকা সাধারনত পাতার নিচের দিকে অতি ক্ষুদ্র সাদা ডিম পাড়ে। ডিম পরে বাদামী রং ধারণ করে ও ৩-১৭ দিন পর ডিম ফুটে নিম্ফ (বাচ্চা) বের হয়। বাচ্চা সবুজাভ সাদা, ২-৬ সপ্তাহ নিম্ফ অবস্থায় থেকে পূর্ণাঙ্গ পোকায় পরিণত হয়। পূর্নাঙ্গ পোকা ১০-১৫ দিন বাঁচে।

ব্যবস্থাপনাঃ হলুদ রংয়ের আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করতে হবে। প্রতি লিটারের ৫ গ্রাম কাপড় কাঁচা সাবান মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। অনুমোদিত কীটনাশক নির্ধারিত মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।

ব্যবস্থাপনাঃ

১. সাদা আঠাযুক্ত বোর্ড স্থাপন বা আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা। ২. নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করা। ৩. 50 গ্রাম সাবানের গুড়া 10 লিটার পানিতে গুলে পাতার নিচে সপ্তাহে 2/3 বার ভাল করে স্প্রে করা। সাথে 5 কৌটা গুল (তামাক গুড়া) পানিতে মিশিয়ে দিলে ফল ভাল পাওয়া যায়। ৪. সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসাবে অনুমোদিত বালাইনাশক ব্যবহার করা। যেমন এডমায়ার 0.5 মিলি বা 0.25 মিলি ইমিটাফ বা 2 মিলি টাফগর/রগব/সানগর প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

রোগের নামঃমরিচের মাকড়

লক্ষণঃ

১ লার্ভা এবং পূর্ণবয়স্ক মাইট গাছের কোষ ছিদ্র করে রস শোষণ করে এবং বিষাক্ত পদার্থ নিঃসৃত করে। গাছে খাদ্য তৈরি এবং পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হয়। পাতা ফ্যাকাশে, মোচড়ানো এবং নিচের দিকে বাঁকানো হয়। পাতা চামড়ার মতো হয়ে যায় এবং শিরাগুলো মোটা হয়। পাতা এবং কচি কাণ্ড লালচে বর্ণের হয়। ফুলের কুঁড়ি বাঁকানো এবং মোচড়ানো হয়। ২ গাছের বৃদ্ধি বিঘ্নিত হয়, কচি গাছের আকার ছোট হয় এবং বয়স্ক গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে ফুল ঝরে পড়ে। ৩ ফল বিকৃত, ৰত বিশিষ্ট, অপরিপক্ব এবং অসম আকৃতির হয়। ফলের উৎপাদন এবং বাজার মূল্য কমে যায়। ৪ সাধারণত নতুন পাতা এবং ছোট ফলে মাইট বেশি দেখা যায় কারণ এ পোকা শক্ত টিস্যু খেতে পারে না। লার্ভা এবং পূর্ণ বয়স্ক মাইটগুলো পাতার নিচের দিক খেতে বেশি পছন্দ করে।

ব্যবস্থাপনাঃ

১। ফল সংগ্রহের সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে যাতে সংগ্রহকারীর কাপড় এবং শরীর দ্বারা মাইটগুলো আক্রান্ত গাছ থেকে অনাক্রান্ত গাছ বা ক্ষেতের মধ্যে ছড়াতে না পারে। ২। সেচ প্রয়োগের মাধ্যমে এর আক্রমণ কমানো সম্ভব। ৩।ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি স্প্রে করতে হবে। এর মধ্যে ১-২% তেল ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ৪। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে নিম্নলিখিত মাকড়নাশক প্রয়োগ করতে হবে- সালফার (কুমুলাস ডিএফ বা রনোভিট ৮০ ডবিৱউ জি বা থিওভিট ৮০ ডবিৱউ জি বা সালফোলাক ৮০ ডবিৱউ জি, ম্যাকসালফার ৮০ ডবিৱউ জি বা সালফেটক্স ৮০ ডবিৱউ জি) প্রতি লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম অথবা প্রোপারগাইট (সুমাইট ৫.৭ ইসি) বা ব্রোমাপ্রোফাইলেট (নিউরোন ৫০০ ইসি) বা ডাইকোফল (ডাইকোফল ১৮.৫ ইসি) বা ইথিওন (ইথিওন ৪৬.৫ ইসি বা সিথিওন ৪৬.৫ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি. হিসেবে। মাইটগুলো সাধারণত পাতার নিচের দিকে থাকে, এ জন্য স্প্রে করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন পাতার নিচের অংশ সম্পূর্ণভাবে ভিজে যায়।

রোগের নামঃমরিচের থ্রিপস পোকা

লক্ষণঃ

এ পোকা ছোট কিন্তু পাতার রস চুষে খায় বিধায় গাছ দূর্বল হয়ে পড়ে। সে কারনে ক্ষেতের মধ্যে পাতা বিবর্ণ দেখালে কাছে গিয়ে মনোযোগ সহকারে দেখা উচিৎ, তা না হলে ফলন অনেক কমে যাবে। পোকা আকৃতিতে খুব ছোট। স্ত্রী পোকা সরু, হলুদাভ। পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ গাঢ় বাদামী। বাচ্চা সাদা বা হলুদ। এদের পিঠের উপর লম্বা দাগ থাকে।

ক্ষতির নমুনাঃ

এরা রস চুষে খায় বলে আক্রান্ত পাতা রূপালী রং ধারণ করে। আক্রান্ত পাতায় বাদামী দাগ বা ফোঁটা দেখা যায়। অধিক আক্রমণে পাতা শুকিয়ে যায় ও ঢলে পড়ে। রাইজোম আকারে ছোট ও বিকৃত হয়।

জীবন চক্রঃ স্ত্রী পোকা পাতার কোষের মধ্যে ৪৫-৫০ টি ডিম পাড়ে। ৫-১০ দিনে ডিম হতে নিম্ফ (বাচ্চা) বের হয়। নিম্ফ ১৫-৩০ দিনে দুটি ধাপ অতিক্রম করে। প্রথম ধাপে খাদ্য গ্রহণ করে এবং দ্বিতীয় ধাপে খাদ্য গ্রহণ না করে মাটিতে থাকে। এরা বছরে ৮ বার বংশ বিস্তার করে। এবং স্ত্রী পোকা পুরুষ পোকার সাথে মিলন ছাড়াই বাচ্চা দিতে সক্ষম।

ব্যবস্থাপনাঃ

১ গাছের আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা ২ প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই প্রয়োগ করা ৩ পরিস্কার পানি জোরে স্প্রে করা ৪ ক্ষেত পরিস্কার/পরিচ্ছন্ন রাখা । ৫ হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা । ৬ তামাকের গুড়া (১০গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫গ্রাম) ও নিমের পাতার নির্যাস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা । ৭ বেশি পোকা দেখা দিলে এডমেয়ার ২০ এসএল ০.৫ মিলি./লি হারে পানিতে শিশিয়ে স্প্রে করা। সাদা রংয়ের আঠালো ফাঁদ ব্যবহার। ক্ষেতে মাকড়সার সংখ্যা বৃদ্ধি করে এ পোকা দমন করা যায়। আক্রমণ বেশি হলে পারফেকথিয়ন/মেটাসিসটক্স এক চা চামচ ৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

রোগের নামঃমরিচের ব্যাকটেরিয়াজনিত নরম পঁচা রোগ

মরিচ রোগ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
মরিচ রোগ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

লক্ষণঃ

এ রোগে আক্রান্ত গাছের পাতা হলদে হয়ে যায় এবং ফলে পানি ভেজা কালো দাগ দেখা যায় । পরে দাগগুলো বড় হয় এবং মরিচ পঁচে যায় ।

ব্যবস্থাপনাঃ

* আক্রান্ত গাছ পলিব্যাগে সংগ্রহ করে নষ্ট করা । * ক্ষেত আক্রান্ত হলে আগে সুস্থ অংশে আন্ত:পরিচর্যা করে পরে আক্রান্ত অংশে করা উচিৎ । * পরিচর্যার সময় যেন গাছ আঘাত না পায় তা নিশ্চিত করা ।

রোগের নামঃমরিচের ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতায় দাগ

রোগের বিস্তার: ব্যাকটেরিয়া শীতকালে মাটিতে থাকে। এটি পোকামাকড়, কৃষি যন্ত্রপাতি, শ্রমিক ও বৃষ্টির পানির মাধ্যমে ছড়ায়।

রোগের লক্ষণ

১.       গাছের পাতার নিচে প্রথমে ছোট গোলকার থেকে অসমান পানি ভেজার মতো লেসইন দেখতে পাওয়া যায়।

২.       স্পটগুলো ফুলে ওঠে এবং এর কেন্দ্র কালো রঙ ধারণ করে।

৩.       পাতা শুকিয়ে গাছ মারা যায়।

৪.       সবুজ ফল আক্রান্ত হয় এবং এগুলো বাদামি হতে কালো হয়।

রোগের প্রতিকার

১.       সুস্থ ও রোগ মুক্ত গাছ হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।

২.       নিড়ানির সময় যেন গাছ ক্ষত না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৩.       আক্রান্ত গাছ উঠিয়ে ফেলতে হবে।

৪.       এক লিটার পানির মধ্যে ৩ গ্রাম কপার অক্রিক্লোরাইড (কুপ্রভিট) মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।

৫.       রোগের প্রাথমিক অবস্থায় এক লিটার পানিতে সানভিট বা কুপ্রভিট ৭ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছে ৭-১০ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

রোগের নামঃমরিচের সারকোস্পোরা পাতায় দাগ

মরিচ রোগ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
মরিচ রোগ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

রোগের বিস্তার

১.       রোগটিবীজ বাহিত। অর্থাৎ বীজের মাধ্যমেও ছড়ায়।

২.       গাছের পরিত্যক্ত অংশ হতে রোগের জীবাণু বায়ু, পানি প্রভৃতির মাধ্যমে এক জমি হতে অন্য জমি অথবা এক গাছ হতে অন্য গাছে ছড়ায়।

৩.       ৬০%-এর বেশি আর্দ্রতা ও ২৮ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় এ রোগ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

রোগের লক্ষণ

১.       আক্রমণের শুরুতে পাতায় প্রথমে গোলাকার আকারের বাদামি দাগ দেখা যায়।

২.       পরবর্তীতে দাগটি ধূসর বা সাদা কেন্দ্র বিশিষ্ট হয় এবং কেন্দ্রের চারিদিকে খয়েরি রঙ ধারণ করে।

৩.       অনেকগুলো দাগ একত্রিত হয়ে পাতার ওপর বড় আকারের দাগ সৃষ্টি হয়।

৪.       পরে আক্রান্ত অংশের কোষসমূহ শুকিয়ে যায় ও দাগের মাঝখানে ছিদ্র হয়ে যায়।

৫.       আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে সম্পূর্ণ পাতাই ঝলসে যায় ও ঝড়ে পড়ে।

৬.       এ প্রকার দাগ ফলেও দেখা যায়।

রোগের প্রতিকার

১.       সুস্থ ও নিরোগ গাছ হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।

২.       ফসল সংগ্রহের পর আক্রান্ত গাছের অবশিষ্টাংশ এবং আর্বজনা পুড়ে ফেলতে হবে।

৩.       একই জমিতে বার বার মরিচ চাষ না করে অন্য জমিতে চাষ করা।

৪.       অতিরিক্ত সেচ পরিহার করা এবং জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা।

৫.       প্রতি কেজি বীজে ২.০-২.৫ গ্রাম ব্যভিস্টিন দিয়ে বীজ শোধ করতে হবে।

৬.       আক্রমণ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ব্যভিস্টিন ১ গ্রাম অথবা টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

রোগের নামঃমরিচের ক্ষত (এ্যানথ্রাকনোজ) রোগ

কলিটোট্রিকাম ক্যাপসিসি নামক ছত্রাক দ্ধারা এ রোগ হয়। এ রোগের আক্রমণে গাছ বড় হয় না, পাতায় দাগ পড়ে ও ডগা থেকে শুরু হয়ে পুরো গাছ মরে যেতে পারে। মরিচে আক্রমন হলে মরিচের ফলন কম হয় এবং রং বিবর্ণ হওয়ায় বাজার মূল্য কমে যায়।

ক্ষতির নমুনাঃ চারা ও বয়স্ক গাছের পাতা, ডাল, ফুল ফল আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত পাতা ঝরে যায় ও ডগা উপর হতে মরতে শুরু করে। আক্রান্ত গাছ ফ্যাকাশে বর্ণ ধারণ করে, দুর্বল হয়ে যায় ও ফল ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। ফলের উপর গোলাকার কাল দাগ পড়ে এবং দাগের চারিদিকে গাঢ় হলুদ রিং বা বলয় থাকে। এ দাগ বৃদ্ধি পেয়ে ফল পঁচিয়ে দেয় ও ঝরে পড়ে। আক্রান্ত গাছ দ্রুত মরে যায়। আর্দ্র আবহাওয়া ও অধিক বৃষ্টিপাত এ রোগ বিস্তারে সহায়তা করে। গাছের পরিত্যাক্ত অংশ, বিকল্প পোষক হতে বায়ু, পানি, ইত্যাদির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। তাছাড়া বীজের মাধ্যমে ও এ রোগের বিস্তার হয়।

ব্যবস্থাপনাঃ সুস্থ গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। আক্রান্ত গাছের পরিত্যাক্ত অংশ ধ্বংশ করতে হবে। অনুমোদিত ছত্রাকনাশক দ্ধারা বীজ শোধন করে বীজ বপন করতে হবে। ক্ষেতে রোগের আক্রমণ দেখা মাত্র টিল্ট-২৫০ ইসি (০.০৫%) ব্যাভিস্টিন (০.১%) বা নোইন (০.২%) ১০ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে।

রোগের নামঃমরিচের আগা মরা রোগ

লক্ষণঃ

এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রথমে গাছ আগা থেকে মরা শুরু হয় এবং ক্রমশ তা নিচের দিকে অগ্রসর হয় এবং এক সময় পুরো গাছ মারা যায় ।

ব্যবস্থাপনাঃ

* আক্রান্ত অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করা । * রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি টিল্ট ২৫০ ইসি ১০-১২ দিন অন্তর ২ বার স্প্রে করা ।

রোগের নামঃমরিচের কান্ড পঁচা রোগ

লক্ষণঃ

এ রোগে আক্রান্ত হলে মাটির কাছাকাছি কলো দাগ দেখা যায় । পরে দাগগুলো বড় হয় এবং কান্ড পঁচে যায়

ব্যবস্থাপনাঃ

* আক্রান্ত পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করা । * রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: ব্যাভিস্টিন বা নোইন ১গ্রাম/ লিটার হারে মিশিয়ে ১০-১২ দিন অন্তর ২ বার স্প্রে করা ।প্রোভেক্স বা হোমাই বা বেনলেট ১% দ্বারা বীজ শোধন করা ।

রোগের নামঃমরিচের কোনিফেরা ব্লাইট রোগ

লক্ষণঃ

এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রথমে পাতায় পানি ভেজা ক্ষত দেখা যায়। পরে পাতার আগা পুড়ে যায়, পাতা ঝরে যায় এবং কান্ড ও শাথা কাল রং ধারণ করে এবং গাছ মরে যায় ।

ব্যবস্থাপনাঃ

* গোড়াসহ আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে নষ্ট করা । * রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি টিল্ট ২৫০ ইসি ১০-১২ দিন অন্তর ২ বার স্প্রে করা ।

রোগের নামঃমরিচের ফিউজারিয়াম ঢলে পড়া

 রোগের লক্ষণ

  • ছত্রাক গাছের নিচের দিকে কাণ্ডে আক্রমণ করে এবং গাঢ় বাদামি ও ডুবা ধরনের ক্যাংকার সৃষ্টি করে।
  • ক্রমে এ ক্যাংকারজনিত দাগ কাণ্ডের গোড়াকে চারদিকে হতে বেষ্টন করে ফেলে।
  • গাছের অগ্রভাগের পাতা হলুদ হয়ে যায়, পরে সব গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
  • স্যাঁতসেঁতে মাটিতে কাণ্ডের গোড়া সাদা অথবা নীলাভ ছত্রাক স্পোর দ্বারা আবৃত হয়ে পড়ে।
  • গাছ লম্বালম্বিভাবে ফাটালে ভাসকুলার বান্ডল বিবর্ণ দেখা যাবে।
  • রোগের অনুকূল অবস্থায় ১০-১৫ দিনের মধ্যে গাছ সম্পূর্ণরূপে ঢলে পড়ে, কিন্তু প্রতিকূল অবস্থায় ২-৩ মাস সময় লাগতে পারে।

 রোগের প্রতিকার

  • একটু উঁচু জমিতে মরিচ চাষ করতে হবে।
  • প্রতি কেজি বীজের জন্য প্রোভেক্স-২০০ অথবা ব্যভিস্টিন ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করে বপন করতে হবে।
  • সম্ভব হলে ফরমালিন দ্বারা মাটি শোধন করতে হবে।
  • জমিতে চুন প্রয়োগ করতে হবে।
  • জমিতে উপযুক্ত পরিমাণে পটাস সার প্রয়োগ করলে রোগ অনেক কম হয়।
  • নীরোগ বীজতলার চারা লাগাতে হবে।
  • রোগাক্রান্ত গাছ তুলে এবং ফসল সংগ্রহের পর পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
  • শিকড় গিঁট কৃমি দমন করতে হবে কারণ এটি ছত্রাকের অনুপ্রবেশে সাহায্য করে।
  • ব্যভিস্টিন প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছের গোড়ার মাটিতে ¯েপ্র করতে হবে। চ্যাম্পিয়ন ২ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

করনীয়ঃ

১। চাষের পূর্বে জমিতে শতাংশ প্রতি ১ কেজি ডলোচুন প্রয়োগ করে জমি তৈরী করুন। ২। প্রতি লিটার পানিতে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডারমা ভিরিডি মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ধরে চারা শোধন করে নিন।

রোগের নামঃমরিচের ফুল ঝড়ে পড়া

লক্ষণঃ

রোরন সারের ঘাটতির কারণে এরকম হতে পারে ।

ব্যবস্থাপনাঃ

শতাংশ প্রতি ১০ গ্রাম রোরন সার প্রয়োগ করা

রোগের নামঃমরিচের ব্লাইট রোগ

লক্ষণঃ

এ রোগে আক্রান্ত মূলে, কান্ড ও পাতায় আক্রমণ দেখা যায় । কান্ড কাল রং ধারন করে শুকিয়ে যায় । ধীরে ধীরে গাছ মরে যায় ।

ব্যবস্থাপনাঃ

* জমিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা । * রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি টিল্ট ২৫০ ইসি ১০-১২ দিন অন্তর ২ বার স্প্রে করা ।

রোগের নামঃমরিচের ফল বিকৃতি

ব্যবস্থাপনাঃ

১. ভাইরাসের বাহক জাবপোকা ও সাদামাছি দমন করা। ২. শতাংশ প্রতি ১০ গ্রাম রোরন সার প্রয়োগ করা।

রোগের নামঃমরিচের ফলছিদ্রকারি পোকা

লক্ষণঃ

পোকার কীড়া কচি ফল ও ডগা ছিদ্র করে ও ভিতরে কুরে কুরে খায় । এরা ফুলের কুঁড়িও খায় ।

ব্যবস্থাপনাঃ

• ক্ষেত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা । • আক্রান্ত ডগা ও ফল সংগ্রহ করে নষ্ট করা। • চারা রোপনের ১৫ দিন পর থেকে ক্ষেত ঘন ঘন পর্যবেক্ষন করা । • জৈব বালাইনাশক ব্যবহার যেমন নিমবিসিডিন ৩ মিঃলিঃ / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্পে করা । • শতকরা ১০ ভাগের বেশি ক্ষতি হলে যে কোন একটি বালাইনাশক ব্যবহার করা । যেমন রিপকর্ড ১ মিঃলিঃ বা ডেসিস ০.৫মিলি বা ফাসটেক ০.৫ মিঃলিঃ বা সবিক্রন -২ মিঃলিঃ বা সুমিথিয়ন-২ মিঃলিঃ বা ডায়াজিনন ২ মিঃলিঃ /লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্পে করা ।

রোগের নামঃমরিচের আলফা মোজাইক রোগ

লক্ষণঃ

এ রোগ হলে গাছের পাতা সাদাটে হয়ে যায় এবং পাতায় সাদাটে হলুদ-সবুজের মোজাইকের মত ছোপ ছোপ দেখা যায় ।

ব্যবস্থাপনাঃ

১. ক্ষেত থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলা ২. ভাইরাসমুক্ত বীজ বা চারা ব্যবহার করা ৩. জাপ পোকা ও সাদা মাছি এ রোগের বাহক, তাই এদের দমনের জন্য ইমিডাক্লোরোপ্রিড ১ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

রোগের নামঃমরিচের ভাইরাসজনিত রোগ

লক্ষণঃ

এ রোগ হলে গাছের পাতা কুচকে যায় এবং পাতায় হলুদ-সবুজের মোজাইকের মত দেখা যায় ।

ব্যবস্থাপনাঃ

১. ক্ষেত থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলা ২. ভাইরাসমুক্ত বীজ বা চারা ব্যবহার করা ৩. জাব পোকা ও সাদা মাছি এ রোগের বাহক, তাই এদের দমনের জন্য ইমিডাক্লোরোপ্রিড ১ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

রোগের নামঃমরিচের হোয়াইট মোল্ড রোগ

লক্ষণঃ

ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়। এতে পাতার বোটায়, কান্ডে ও ফলে সাদা তুলার মত বস্তু দেখা এবং আক্রান্ত অংশ এমনকি পুরো গাছ মারা যায় ।

ব্যবস্থাপনাঃ

১. উপরি সেচের পরিবর্তে প্লাবন সেচ দেয়া। ২. প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত ফল,পাতা ও ডগা অপসারণ করা। ৩. বীজ লাগানোর আগে গভীরভাবে চাষ দিয়ে জমি তৈরী করা । ৪. প্রপিকোনাজলগ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ৩ বার শেষ বিকেলে স্প্রে করা।

রোগের নামঃমরিচের ক্যাংকার রোগ

লক্ষণঃ

এ রোগে আক্রান্ত পাতায় নিচের দিকে প্রথমে ছোট ছোট পানিভেজা দাগ দেখা যায় আস্তে আস্তে দাগগুলো বড় হয় এবং কান্ডে ক্যাংকারের ক্ষত দেখা যায়।

ব্যবস্থাপনাঃ

১. রোগ দেখা দিলে প্রাধমিক পর্যায়ে আক্রান্ত গাছ অপসারণ করা । ২. পানি নিষ্কাশনের ভাল ব্যবস্থা করা। ৩. নাইট্রেজেন সার ভাগ ভাগ করে কয়েকবারে প্রয়োগ করা ।

সাবধানতাঃ

জমিতে নাইট্রেজেন সার একবারে প্রয়োগ করবেন না ।

রোগের নামঃমরিচের ব্লাইট রোগ

লক্ষণঃ

এ রোগে আক্রান্ত মূলে, কান্ড ও পাতায় আক্রমণ দেখা যায় । কান্ড কাল রং ধারন করে শুকিয়ে যায় । ধীরে ধীরে গাছ মরে যায় ।

ব্যবস্থাপনাঃ

১।জমিতে পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা করা । ২।রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি টিল্ট ২৫০ ইসি ১০-১২ দিন অন্তর ২ বার স্প্রে করা ।

রোগের নামঃমরিচের কান্ড পঁচা রোগ

লক্ষণঃ

এ রোগে আক্রান্ত হলে মাটির কাছাকাছি কলো দাগ দেখা যায় । পরে দাগগুলো বড় হয় এবং কান্ড পঁচে যায়

ব্যবস্থাপনাঃ

১। আক্রান্ত পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করা । ২। রোগ দেখা দিলে প্রতি লিটার পানিতে কার্বেন্ডজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: ব্যাভিস্টিন বা নোইন ১গ্রাম/ লিটার হারে মিশিয়ে ১০-১২ দিন অন্তর ২ বার স্প্রে করা ।

রোগের নাম: অলটারনারিয়া ফল পচা

রোগের বিস্তারবীজের মাধ্যমে এ রোগের বিস্তার ঘটে থাকে।

রোগের লক্ষণ

১.       কেবল মাত্র পরিপক্ব ও পাকা ফলে এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

২.       প্রথমে ফলের উপরিভাগে বিশেষ করে অগ্রভাগের দিকে বড় আকারের উপবৃত্তাকার থেকে ডিম্বাকৃতি দাগ পড়ে।

৩.       দাগগুলোর বহির্ভাগে হলদে ধূসর ও অভ্যন্তর ভাগে বাদামি কালো রঙ ধারণ করে।

৪.       দাগগুলো পরে বিস্তৃতি লাভ করে।

৫.       আক্রান্ত ফলের বীজ কালো রঙ ধারণ করে।

রোগের প্রতিকার

১.       সুস্থ ও সবল ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।

২.       প্রোভেক্স-২০০ (প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম) দ্বারা শোধন করে বীজ বপন করতে হবে।

৩.       গাছের পরিত্যক্ত অংশ ও আগাছা একত্র করে ধ্বংস করে ফেলতে হবে।

৪.       রোভরাল প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

We will be happy to hear your thoughts

Leave a reply

🛠️ Change
KrishiMela
Logo
Register New Account
Shopping cart